ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নড়াইলের লোহাগড়াসহ দেশজুড়ে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়।

মানববন্ধনে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, বর্তমান সরকার যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, রাষ্ট্রের উন্নয়ন করছেন কিন্তু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য যে সকল পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সেটি করছেন না। আমাদের প্রতি তাদের কোন নৈতিক দায়িত্ব নেই। পুলিশ প্রশাসন রাষ্ট্রীয় আদেশ ছাড়া স্বতঃস্ফুর্তভাবে কোন কাজ করে না। নড়াইলে যখন হিন্দুদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তারা চলে যায় ঠিক তার পরক্ষণই পুলিশ এসে চারিদিক ঘেরাও করে রাখে। আপনারা মন্দিরে কোরআন শরীফ রেখে আসলেন কিন্তু সে তো সেটা করেনি। তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে স্ট্যাটাসটি দেওয়া হয়েছে বিষয়টি আপনারা জেনেও আপনারা এটা করলেন। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ফায়েক উজ্জামান বলেন, ‘ব্যক্তির বিষয়কে কেন্দ্র করে যখন সমষ্টির উপর দোষারোপ করে হামলা চালানো হয় তখন সেটি কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এর থেকে নেক্করজনক কাজ আর হতে পারে না। এদের বিরুদ্ধে আমাদের এক হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে। রাষ্ট্রীয় আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে অতি দ্রুত বিচারের আওতায় আনা উচিত। না হলে এ ধরণের ঘটনা ঘটতে থাকবে। একজন মুসলমান হিসাবে আমি কোন ভাবেই মনে করি না সনতন ধার্মাবালম্বীদের উপর এ আঘাত করা ইসলাম অনুমোদন করে। সবাই যেনো শান্তি পূর্ণ ভাবে মিলে মিশে থাকতে পারে আমরা সেই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চাই।’

কর্মসূচিতে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী বলেন, আমাদের অতি দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে স্বাধীনতা পক্ষের শক্তি যখন ক্ষমতায় তখনও আমাদের প্রতি সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে, শিক্ষকের ওপর হামলা হচ্ছে। আমরা আবেদন নিবেদন করছি কিন্তু কোন রকম পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে আমরা জানি না। আমাদের দেখাতে হবে কোথায় বিচার হচ্ছে। দশ-পনেরো বছর ধরে যে বিচার হয় সে বিচার বিচার নয়, অবিচার। আমরা এই অবিচার চাই না। আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাই তারা যেন অতিসত্বর দৃশ্যমান কোন বিচারের ব্যবস্থা করে।

মানববন্ধনে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অমিত কুমার দত্তের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি কমল কৃঞ্চ বিশ্বাস, আইন বিভাগের সভাপতি হাসিবুল আলম প্রধান প্রমুখ। মানববন্ধনে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।